চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডভর্তি কনটেইনার বিস্ফোরণ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটি। এতে বলা হয়েছে বিপজ্জনক এসব রাসায়নিক যেসব জারে রাখা হয়েছিল, সেগুলোর আন্তর্জাতিক মান সনদ ছিল না। আন্তর্জাতিক মান সনদধারী জারে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের মতো বিপজ্জনক পণ্য পরিবহন বাধ্যতামূলক হলেও কেমিক্যালের মালিক প্রতিষ্ঠান তা করেনি। এমনকি রাসায়নিক রাখার এসব জারের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানও নিশ্চিত করা হয়নি।
ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দর প্রতিবেদনে আরা বলা হয়েছে, বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, নিরাপত্তা ও সুরক্ষাসংক্রান্ত নীতিমালা অমান্য করা এবং ডিপো-সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাই এই বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডবাহী কনটেইনারের মালিক প্রতিষ্ঠান আল রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সকেও দায়ী করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। এ ধরনের ঘটনা এড়াতে কনটেইনার ডিপোতে বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনার নীতিমালা প্রণয়নসহ তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছেন কমিটির সদস্যরা।
বিএম ডিপোতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডভর্তি যেসব কনটেইনার বিস্ফোরিত হয়, সেসব কনটেইনারের মালিক আল রাজী কেমিক্যাল। বিএম ডিপো ও আল রাজী কেমিক্যালের মালিকানায় রয়েছে স্মার্ট গ্রুপ।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাসায়নিকসহ বিপজ্জনক পণ্যের কনটেইনার এবং পোশাকসহ অন্য রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার ডিপোতে একসঙ্গে রাখা হতো। বিপজ্জনক পণ্য আলাদা রাখা হলে এত মানুষ হতাহত হতো না। আবার ধোঁয়া বের হওয়ার সময়ই ওই কনটেইনারটি নিরাপদে সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেত না। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা ও সুরক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা দায়দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। আবার ডিপোতে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম থাকলেও আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত পানি সরবরাহের লাইন ছিল না। আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিপোতে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত জনবল ছিল না। প্রশিক্ষিত জনবল থাকলে সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারত। আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়। এছাড়া ডিপোতে রাসায়নিকের কনটেইনার থাকার বিষয়টি সঠিকভাবে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়নি।
Leave a Reply