1. admin@bomkesh.news : admin :
রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন

ত্রিবিগহ মন্দির, রংপুর

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২
  • ১৪১ বার পঠিত

রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলা কার্যালয় এবং পীরগাছা রেলওয়ে ষ্টেশনের কাছেই দেবী চৌধুরাণীর রাজবাড়িটি অবস্থিত। মন্থনা জমিদার দেবী চৌধুরানীর আসল নাম হলো জয়াদুর্গা দেবী চৌধুরানী। পীরগাছা উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এই জমিদার বাড়িটি পীরগাছা রাজবাড়ি ও মন্থনা জমিদার বাড়ি নামেও পরিচিত।
১৭০৩-০৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রায় ২৮ একর জায়গা নিয়ে জমিদার অনন্তরামের মাধ্যমে দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ির গোড়াপত্তন ঘটেছিলো। দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়িতে রয়েছে জমিদার জ্ঞানেন্দ্র নারায়ন রায় কর্তৃক নির্মিত দেড় শতাধিক বছরের পুরাতন ত্রিবিগ্রহ মন্দিরে অন্নপুর্ণ বিশেশ্বর, শিব এবং হরিহর বিগ্রহ পাশাপাশি কক্ষে রক্ষিত রয়েছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর প্রজা পীড়নের বিরুদ্ধে তৎকালীন ভারতবর্ষে প্রথম নারী হিসাবে পীরগাছার মন্থনা জমিদার অস্ত্র হাতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় আনন্দমঠ ও দেবী চৌধুরানীর নামে দুটি বই রচনা করেছিলেন। দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ির ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন মন্দিরগুলো কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে রয়েছে। প্রতিবছর রাজবাড়ির মন্দিরে বিভিন্ন পূজা অর্চণার আয়োজন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ির কাচারী ঘর এবং নাট্য মন্দির পীরগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

রাজবাড়ির চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দৃষ্টি নন্দিত ছোট বড় অনেক পুকুর । বাড়ির পিছনে ইতিহাসের কালের সাক্ষী হয়ে কোনমতে বেঁচে আছে দেবী চৌধুরানীর খননকৃত ঢুসমারা খাল অর্থাৎ হঠাৎ বা অকষ্মাৎসৃস্টি। দেবী চৌধুরানী এ খাল দিয়ে নৌকাযোগে নদী পথে বিভিন্ন গোপন অবস্থায় যাতায়াত করতেন।

বিশাল এলাকা নিয়ে ছড়ানো ছিটানো এ রাজবাড়ির অসংখ্য দালান আজ ধ্বংসপ্রায়। দালানের ইট,পাথর ও সুড়কি খুলে পড়েছে । দেয়ালের জীর্ণতা ও শেওলার অাঁচড়ে পরগাছা জন্মেছে । ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজবাড়ির নাট্য মন্দির ও কাচারী ঘরটি বর্তমানে পীরগাছা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

রাজবাড়ির ভিতরে নির্মিত প্রাচীন মন্দিরগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। জমিদার জ্ঞানেন্দ্র নারায়ন রায় কর্তৃক নির্মিত অপূর্ব কারুকার্য মন্ডিত দেড় শতাধিক বছরের পুরানো দৃষ্টি নন্দিত ত্রিবিগ্রহ মন্দির ধ্বংসের অপেক্ষায় দিন গুনছে । এখানে অন্নপুর্ণ বিশেশ্বর, শিব ও হরিহর তিনটি বিগ্রহ এক মন্দিরের পাশাপাশি কক্ষে স্থাপন করা রয়েছে । বাংলার মন্দির দাম্পত্য ইতিহাসে এক অনন্য বিরল দৃষ্টান্ত ।
এখানে প্রতি বছর হিন্দু সম্প্রদায় পূজা পার্বন পালন করেন । এ ছাড়াও এখানে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন অনুষ্ঠানাদি পালন কওে থাকেন । মড়হনা জমিদার জ্ঞানেন্দ্র নারায়নের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় ১৯২৮খ্রিঃ একটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । যা পরে তার নামানুসারে জে এন উচ্চ বিদ্যালয় নাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় সমাজসেবীদের প্রচেষ্টায় মন্থনা জমিদার রাজবাড়ী নামে রাজবাড়ী স্কুল প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে । ঐতিহাসিক মন্থনা জমিদার প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ীর সহানসমূহকে ঘিরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা সহজ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2022 Bomkesh.News
Theme Customized By Shakil IT Park