২০০০ সালের ৯ মার্চ সেনেগালে জন্ম নেন খাবি লেম। যদিও তাঁর আসল নাম খাবানে লেম লেম। তাঁর বয়স যখন সবে এক, তখন তাঁর পরিবারের সবাই একটু উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় ইতালিতে চলে যান। পারিবারিক আর্থিক সংকটের কারণে অল্প বয়সেই খাবি ঢুকে পড়েন চাকরিতে। ইতালির তুরিন শহরে। একটা কোম্পানিতে মেশিন চালানোর কাজ। খুব খাটাখাটনি, অথচ বেতন খুবই অল্প। সেই চাকরিও চলে যায় মহামারিকালের লকডাউনে। অনেক অনুনয়–বিনয় করেও খাবি বাঁচাতে পারেননি তাঁর ছাপোষা চাকরিটা।
চাকরি হারিয়ে বাড়ি ফিরে দিশাহারা হয়ে পড়েন খাবি। কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। কী মনে করে টিকটকে অ্যাকাউন্ট খুললেন। ভাবলেন, এই সময়ে তাঁর মতো অনেকেই হতাশ, বিরক্ত। তাঁদের বিনোদন দেবেন। যে-ই ভাবা, সেই কাজ। শুরু করলেন কমেডি। কোনো কথা না বলে কেবল শরীর দিয়ে কমেডি করেন খাবি। ২২ বছর বয়সী এই তরুণের শরীরী ভাষা অনেকটা ‘পোকার ফেস’ ইমোজির মতো। মজা করেই তিনি দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যার সহজ সমাধানও দেন। শুরুতে তেমন ভিউ হচ্ছিল না। ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রথম তাঁর একটা ভিডিও তুমুল ভাইরাল হয়। তখন খুঁজে খুঁজে মানুষ দেখল, খাবির আরও ভালো ভিডিও আছে, যেগুলো ভাইরাল হয়নি। ফলে ওই সময় একের পর এক খাবির বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হতে থাকে।
২০২১ সালের এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে গড়ে ১০ লাখ নতুন ফলোয়ার পেতে শুরু করেন খাবি। সেই মাসেই তিনি গিনলুকা ভাচ্চিকে পেছনে ফেলে হন ইতালির সবচেয়ে অনুসরিত টিকটকার। ভক্তদের দাবির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এরপর প্রতিদিন তিন থেকে চারটি ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেন তিনি। সারা দিন থাকতেন ভিডিও বানানো নিয়ে। মুখের ভঙ্গিমায় বানানো খাবির এসব ভিডিওর ভাষা বুঝতে বিশ্ববাসীর কোনো অসুবিধা হয়নি। জুলাই মাস আসতে না আসতেই খাবি টিকটকের সবচেয়ে বেশি অনুসারী পাওয়া পুরুষদের ভেতর দ্বিতীয় অবস্থানে চলে যান। প্রথম অবস্থানে তখন ছিলেন জ্যাচ কিং। ওই মাসেই তিনি মার্কিন ইন্টারনেট পারসোনালিটি জ্যাচকে পেছনে ফেলে হয়ে যান টিকটকের সবচেয়ে বেশি ফলোয়ারসমৃদ্ধ পুরুষ।
টিকটকে প্রতিটি পোস্ট থেকে খাবি অন্তত ২২ হাজার ডলার বা ২০ লাখ টাকা আয় করেন। মাত্র দেড় বছরে কেবল টিকটক থেকেই তিনি আয় করেছেন ১০০ কোটি টাকার বেশি। একের পর এক কোম্পানি যুক্ত হচ্ছে খাবির সঙ্গে। সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত জার্মান ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুগো বস খাবির সঙ্গে ‘মাল্টি ইয়ার পার্টনারশিপ’-এর চুক্তি করেছে।
Leave a Reply