গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার ওই টিম গঠন করা হয়।
দুদক সূত্রের খবর, একইদিনে অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ছয় ধরনের নথি চেয়ে টিমের প্রধান গুলশান আনোয়ার প্রধান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান/এমডি ও সিইও’র কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে ওইসব নথি পাঠাতে বলা হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে ওই খাতের তিন হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধান টিমের সদস্যেরা হলেন, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী। এই অনুসন্ধান কার্যক্রমের তদারককারি কর্মকর্তা হিসেবে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
নথি চেয়ে চিঠি:-
চিঠিতে যেসব নথি চাওয়া হয়, সেগুলো হল- গত ২০০৬-২০১০ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৩৬৪,১৭,০৯,১৪৬ টাকার ৫ শতাংশ অর্থ প্রদান সংক্রান্ত তথ্যাদি বা রেকর্ডপত্রের ফটোকপি। ওই অর্থ কাকে কীভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে, তার বিবরণ ছকে দিতে হবে।
বিগত ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বাবদ শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা ৩৬৪,১৭,০৯,১৪৬ টাকা পরিশোধকালে ফি এবং অন্যান্য ফির নামে ৩৬৪,১৭,০৯,১৪৬ টাকার ৬ শতাংশ টাকা কর্তন সংক্রান্ত তথ্যাদি বা রেকর্ডপত্রের ফটোকপি। ওই অর্থ কাকে কীভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে, তার বিবরণও ছকে দিতে হবে।
বিগত ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫,৫২,১৩,৬৪৩ টাকা বিতরণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের কপি বা তথ্যাদি। ওই কোম্পানির কল্যাণ তহবিলে ওই অর্থ স্থানান্তর করা না হলে ওই অর্থ কোথায়, কীভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে খরচ করা হয়েছে, তার তথ্যাদি। এছাড়া গত ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ থেকে ২,৯৭৭ কোটি টাকা ড. ইউনূস ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর সংক্রান্ত তথ্য ছক অনুযায়ী চাওয়া হয়েছে।
গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির ১৯৯৭ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদের বিস্তারিত তথ্য, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি পরিচালনার আইন ও বিধিগুলোতে পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্যের ওই কোম্পানি থেকে ঋণ পাওয়ার বৈধ অধিকার রয়েছে কিনা বা এ পর্যন্ত পর্ষদের কোন কোন সদস্য কত টাকা ঋণ নিয়েছেন এবং ঋণের অর্থ কীভাবে উত্তোলন করেছেন, সেসব তথ্যাদি ছকে দিতে হবে এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি।
গ্রামীণ ফোন কোম্পানিতে গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির কত শতাংশ শেয়ার রয়েছে এবং এ শেয়ারের বিপরীতে ১৯৯৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি কত টাকা লভাংশ পেয়েছে, ওই লভাংশের টাকা কোন কোন খাতে কীভাবে ব্যয় করা হয়েছে, তার বছর ভিত্তিক তথ্য ছকে দিতে হবে।
Leave a Reply