মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার ওরফে জুনুনির নির্দেশে ৩৬ সদস্য পরিকল্পিতভাবে গুলি করে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে (৫০) হত্যা করেন। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩৬ জনের নাম উঠে এলেও ঠিকানা নিশ্চিত করতে না পারায় সাতজনকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
যেখানে রয়েছে আরসাপ্রধান জুনুনির নামও। সোমবার (১৩ জুন) কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রে এসব বর্ণনা উঠে আসে। ২৯ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে জেলা কারাগারে এবং প্রথম গুলি চালানো রহিমসহ ১৪ জন ঘটনার পর থেকে পলাতক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সবাই রোহিঙ্গা শিবিরে চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মে জড়িত বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, মুহিবুল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি শিক্ষিত ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হওয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার পক্ষে ও রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন দেশে পাচার প্রতিরোধে সোচ্চার ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি রোহিঙ্গাদের খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের বিরোধিতা করতেন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় ও শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে এআরএসপিএইচ নামে সংগঠন তৈরি করেন মুহিবুল্লাহ। এসব কারণে আরসা (আল-ইয়াকিন নামেও পরিচিত) নেতাদের সঙ্গে তার বিরোধ বাড়তে থাকে। আরসাপ্রধান জুনুনিসহ অন্যরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দুদিন আগে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে ক্যাম্প-১ এর নতুন মার্কাজ ফারুক মাঝির ব্লকে মাস্টার আবদুর রহিম ওরফে রকিমের অফিস কক্ষে গোপন বৈঠক বসে। বৈঠকে মুহিবুল্লাহকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।
Leave a Reply